শামীম ওসমানের মানবিকতার সুযোগের অপব্যবহার ঈদের পরেও হকারদের দখলে নগরীর ফুটপাত

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের সুপারিশে ঈদ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ফুটপাতে হকার বসার অনুমতি পেলেও ঈদের পরেও হকাররা ফুটপাতের দখল ছাড়েননি বলে অভিযোগ করেছেন পথচারীরা। আর সাংসদের মানবিকতার সুযোগকে দুর্বলতা মনে করে হকাররা তার অপব্যবহার করছেন বলে মন্তব্য করেন তারা। তাই অবিলম্বে নারায়ণগঞ্জের ফুটপাত পুনরায় হকারমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছেন সকলে।
ঘটনার বিবরনে প্রকাশ, রমজান মাসের শুরুতে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল দফতরের চেষ্টায় নগরীর ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ করা হয়। আর এতে করে নারায়ণগঞ্জের মানুষ হাফ ছেড়ে বাঁচে। তারা নির্বিঘেœ শহরের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে চলাচল করার সুযোগ পায়। কিন্তু উচ্ছেদ হওয়ার পর কয়েক হাজার হকার অন্তত রোজার মাসে তাদেরকে বসার অনুমতি দানের জন্য রাজপথে নেমে মিটিং, মিছিল, মানববন্ধন করতে থাকে। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপিও দেয়। এক পর্যায়ে তারা বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের দ্বারস্থ হয়। সাংসদ শামীম ওসমান মানবিক দিক বিবেচনা করে ঈদ পর্যন্ত হকারদের ফুটপাতে বসার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করেন। সাংসদের সুপারিশে হকাররা ঈদ পর্যন্ত ফুটপাতে বসার অনুমতি পায়। অনুমতি পেয়ে হকাররা ঈদ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের ফুটপাত দখল করে পুরোদমে ব্যবসা চালিয়ে যায়। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে ঈদের পরে। ঈদ পর্যন্ত বসার অনুমতি থাকলেও হকাররা সাংসদের দোহাই দিয়ে ঈদের পরেও ফুটপাতের দখল ছাড়তে নারাজ। প্রশাসনও এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে জনমনে। তবে কি সাংসদের মানবিকতাকে দুর্বলতা ভাবছে হকাররা!
বিবি রোডের জনৈক পথচারী আক্ষেপের সুরে বলেন, ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদের পর নারায়ণগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের চাওয়া পূরন হয়েছিলো। নারায়ণগঞ্জে স্মরণকালের সর্ববৃহত এ উচ্ছেদের পর সাধারণ মানুষ ভেবেছিলো, এবার আর অতীতের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। ইতিপূর্বে বহুবার ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদ হলেও কিছুদিন পর তা আবার দখল হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু এবার রমজান মাসে প্রশাসনের তৎপরতা দেখে মনে হয়েছিলো, এবার আর বুঝি ফুটপাত হকারদের অবৈধ দখলে যাবে না। নারায়ণগঞ্জের মানুষ নিশ্চিন্তে ফুটপাত দিয়ে চলাফেরা করতে পারবে। কিন্তু মুসলমানদের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ উল ফিতর উপলক্ষে মানবিক দিক বিবেচনা করে সাংসদ ঈদ পর্যন্ত তাদেরকে ফুটপাতে বসার অনুমতি দিয়েছিলো। নারায়ণগঞ্জের মানুষও এটা মেনে নিয়েছিলো। কিন্তু ঈদের পরও হকাররা ফুটপাতের দখল না ছাড়ায় জনগনের মাঝে পুরানো আতঙ্ক আবারো মাথাচারা দিয়ে উঠছে। তবে কি হকাররা সাংসদের মানবিকতাকে পুজি করে ফুটপাতের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে গেলো! আমরা সাধারণ জনগন সাংসদের কাছে এর সুষ্ঠ সমাধান চাই। আমরা চাই হকারমুক্ত ফুটপাত দিয়ে নিশ্চিন্তে পথ চলতে। পাশাপাশি হকারদের এই ইদুর বিড়াল খেলার চিরস্থায়ী সমাধান। তাদের পূনর্বাসন করে নারায়ণগঞ্জের হকার সমস্যার স্থায়ী সমাধান করার জন্য আমরা সাংসদের সু-দৃষ্টি কামনা করছি। সাংসদ হকারদের ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। এবার দেখার পালা, তিনি নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের ডাকে সাড়া দেন কিনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *