২-০ তে এগিয়ে গেল টাইগাররা

আগের দিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে এসে সিরিজের সবকটি ম্যাচ জয়ের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে গিয়েছিলেন সাব্বির রহমান। তার কথা রাখার পথে যেন ঠিকই হাটা শুরু করলেন বাংলাদেশের এই তরুণ অল রাউন্ডার। সিরিজের প্রথম ম্যাচে তারই ব্যাটে জয়ের ভিত রচিত হয়েছিল। গতকাল দ্বিতীয় ম্যাচেও স্বাগতিকদের জয়ে তিনিই মধ্য মনি। আগের ম্যাচে ব্যাট হাতে কচু কাটা করেছিলেন সাব্বির জিম্বাবুয়ে বোলারদের। আর গতকাল ব্যাট হাতে ঝড় তোলার পাশাপাশি বল হাতেও জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের বোকা বানিয়েছেন সাব্বির। মূলত তারই অল রাউন্ড নৈপূণ্যে সিরিজের দ্বিতীয় টিটোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে ৪২ রান হারিয়েছে বাংলাদেশ। আর তাতেই চার ম্যাচের সিরিজে ২০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল টাইগাররা। ক্রমশ যেন টিটোয়েন্টি ভীতি কাটতে শুরু করেছে বাংলাদেশের। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে দাপুটে জয় এখন সিরিজ জয়ের দিকেই হাটছে টাইগাররা। প্রথম ম্যাচে ৩৬ বলে ৪৬ রানে করে দলের জয়ে বড় ভুমিকা রাখা সাব্বির গতকাল করলেন ৩০ বলে ৪৩ রান। গতকাল তাকে আউটই করতে পারেনি জিম্বাবুয়ের বোলাররা। আর বল হাতে ১১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের পরাজয়কে তরান্বিত করেছেন সাব্বির। টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে সূচনাটা ভালোই করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। ফর্মহীনতায় থাকা সৌম্য সরকার ইঙ্গিত দিলেন ফর্মে ফেরার। শুরু থেকেই জিম্বাবুয়েন বোলারদের উপর চড়াও হয়ে খেলতে শুরু করেন দুই ওপেনার। ৪৫ রান যোগ করার পর বিচ্ছিন্ন হন দুজন। মুজারাবানির বলে ভিটরির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন তামিম ইকবাল। ফেরার আগে করে যান ১৭ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২৩ রান। তামিম বিদায় নিলেও সৌম্য সরকার আর সাব্বির রহমান শাসন করেছেন প্রতিপক্ষের বোলারদের। তবে দলীয় ৭৫ রানের মাথায় সৌম্যকে থামায় ক্রেমার। ৩৩ বলে চারটি চার ও তিনটি ছক্কার সাহায্যে ৪৩ রান করে ফিরে সৌম্য সরকার। এক রান পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ফিরে এলেও ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন সাব্বির রহমান। তাকে ভালই সহায়তা দিচ্ছিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু হ্যামস্ট্রিংয়ের আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মুশফিককে। আহত হয়ে ফিরে আসার আগে ২০ বলে ২৪ রান করেন তিনি। এরপর দায়িত্বটা তুলে নেন সাব্বির রহমান ও সাকিব আল হাসান। ৩০ বলে এক চার ও তিন ছয়ে ৪৩ রানে অপরাজিত থাকেন সাব্বির রহমান। অন্যদিকে সাকিব আল হাসান ১৭ বলে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। এর মধ্যে ছিল দুটি চার ও একটি ছক্কার মার। আর তাতেই বাংলাদেশের স্কোর গিয়ে দাড়ায় ১৬৭ রানে। জিম্বাবুয়ের হয়ে মুজারাবানি, ক্রেমার ও ওয়েলিংটন মাসাকাদজা একটি করে উইকেট লাভ করেন।

১৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল করেছিল জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার হ্যামিল্টন মাসাকাদজা এবং ভুসি সিবান্দা। ৫০ রান যোগ করেন এ দুজন। মাশরাফি এসে বিচ্ছিন্ন করেন দুজনকে। ১৭ বলে ২১ রান করা সিবান্দাকে সরাসরি বোল্ড করেন মাশরাফি। এরপর বল হাতে চমক দেখান সাব্বির রহমান। প্রথমে বিদায় করেন ক্রমেই ভয়ংকর হয়ে ওঠা হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে। ২৮ বলে ৩০ রান করা গতকাল চিগুম্বুরার জায়গায় অধিনায়কত্ব করতে নামা মাসাকাদজা। এরপর ৫ রান যোগ হতেই আঘাত হানেন শুভাগত হোম। তিনি বিদায় করেন ৬ বলে ৭ রান করা উইলিয়ামসকে। আন্তর্জাতিক টি২০ ক্রিকেটে শুভাগতর এটি প্রথম উইকেট। জিম্বাবুয়ের দলীয় রান তখন ৩ উইকেটে ৫৫। এবার আবার সাব্বিরের আঘাত। ১১ বলে সাত রান করা মুতুম্বামিকে সৌম্যের ক্যাচে পরিণত করেন সাব্বির। এরপর আল আমিনের আবির্ভাব। তিনি ফেরান ভয়ংকর হয়ে ওঠা ওয়ালারকে। ২১ বলে ২৯ রান করে সৌম্যের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওয়ালার। ১০৫ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যানরা আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। শেষ দিকে মুস্তাফিজ আর সাব্বিরের যৌথ আক্রমণে ১২৫ রানে থামতে হয় জিম্বাবুয়েকে। আর তাতেই ৪২ রানের জয় নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের। ২.১ ওভার বল করে ১১ রান খরচায় তিনটি উইকেট নিয়েছেন সাব্বির। ১৯ রানে ২টি উইকেট নেন মুস্তাফিজ। এছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন আল আমিন, মাশরাফি এবং শুভাগত হোম। তবে ম্যাচ সেরার পুরষ্কার উঠে সাব্বির রহমানের হাতে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

News Banglabd Design by
Website Mela