উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সুইপার দিয়ে রোগিদের খাবার রান্না ও বিতরণ ॥ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রোগিরা

বন্দর সংবাদদাতা:-
বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া রোগিদের সুইপার দিয়ে খাবার রান্না ও বিতরণ করাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এতে করে রোগিরা স্বাস্থ্য সেবার চেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেই রয়ে যাচ্ছেন। দীর্ঘ দিন যাবত সাইপার সখিনা বেগম ও খলিলুর রহমান রোগিদের খাবার রান্না করছেন এবং নিজ হাতে রোগিদের ওয়ার্ডে গিয়ে খাবার তুলে দিচ্ছেন। রোগিরা না জেনে এ সকল খাবার খাচ্ছেন। অনেক রোগি আবার খাবারের মান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। রোগিরা বলেন সপ্তাহে ৩ দিন মুরগীর মাংস দিলেও তা ছোট, মাছ দিচ্ছে ৪ দিন। সুইপার দিয়ে খাবার দেয়ার কথা শুনে কয়েকজন রোগি খাবার খায়নি। হাসপাতালে ৩ জন ওয়ার্ড বয় থাকলেও তাদের দিয়ে রোগিদের খাবার দেয়া হচ্ছে না। ওয়ার্ড বয় মোজাম্মেল, কবির ও বাহার ওয়ার্ডে কাজ না করে তারা সারাক্ষন জরুরী বিভাগে পড়ে থাকেন। এ ছাড়া ৩ জন আয়া থাকলেও তাদের দ্বারা খাবার দেয়া হয়না।
সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায়, সুইপার সখিনা ও খলিল রান্না শেষ করে রোগিদের খাবার টলিতে তুলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে নিজ হাতে খাবার দিচ্ছেন।
এ ব্যপারে মহিলা ওয়ার্ডের রোগি চন্দ্র বানু (৬০) জানান, তিনি পায়ের ব্যথার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সকালে নাস্তা, দুপুরে ও রাতের খাবার দিচ্ছে সখিনা ও খলিল নামের দুই জন। তবে খাবার পর্যাপ্ত দেয়া হয় খাবারে কোন ঘাটতি নেই।
পুরুষ ওয়ার্ডের রোগি ফরাজীকান্দার নাসির মিয়া ও জহরপুরের বিল্লাল হোসেন জানান, তারা শ্বাস কষ্ট রোগের জন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। পরিছন্ন কর্মী সখিনাকে পরিস্কারের কথা বললে সে খারাপ আচরন করে।
এ ব্যপারে সুইপার খলিল ও সখিনা জানান, সিভিল সাজর্নের অর্ডারে আমরা রোগিদের খাবার রান্না ও বিতরণ করে যাচ্ছি। আমরা হাসপাতালের বর্জ পরিস্কার শেষে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে রান্না ও খাবার বিতরণ করে থাকি।
বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. হাবিবুর রহমান জানান, সুইপার দিয়ে খাবার রান্না ও বিতরণ করা অবশ্যই খারাপ, আমার বাসায় হলেও আমি এ খাবার খেতাম না। রোগিদের এ ভাবে খাবার দেয়া সঠিক নয়। তবে কয়েকটি পদ শূন্য থাকায় সিভিল সার্জনের অনুমতিতে সুইপার খলিল খাবার দিচ্ছেন তবে সুইপার সখিনার কথা জানা নেই।
এ ব্যপারে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইনচার্জ ডা. আফতাব উদ্দিন জানান, জনবল কম থাকায় সিভিল সাজর্নের অনুমতিতে পরিছন্ন কমী খলিল ও সখিনা রোগিদের খাবার রান্না ও বিতরণ করে থাকেন। বর্তমানে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ জন ডাক্তারসহ প্রায় ২৪টি পদ শূন্য রয়েছে। এমএলএএস পদে ৪টির মদ্যে ২টি, বাবুর্চি ২টি মধ্যে ২টিই, নিরাপত্তা কর্মী ৩টির মধ্যে ১টি, পরিছন্ন কর্মী ৫টির মধ্যে ১টি, স্বাস্থ্য সহকারী ৩০টির মধ্যে ১৫টি, ডাক্তারদের মধ্যে কনসালটেন্ট সাজার্রি ১টি, কনসালটেন্ট গাইনী ১টি, কনসালটেন্ট এনাস্টেনিয়াম ১টি পদ শূন্য রয়েছে। জনবল কম দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা চালাতে হচ্ছে। রোগিদের স্বার্থে নিজের বেতনের টাকাও দিয়েও কিছু যন্ত্রপানি কিনে দিয়েছি।
এ ব্যপারে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আসুতুষ কুমার দাসের মোবাইল নং ০১৭৫৩৫১৬২০৭ নাম্বারে ফোন করলে তিনি মিটিংয়ে আছেন বলে ফোনটি কেটে দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

News Banglabd Design by
Website Mela