টাকা পাচার উদ্বিগ্ন এনবিআর

টাকা পাচার বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশ থেকে ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকার সমপরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে। এ প্রতিবেদনটিকে ‘আই ওপেনিং রিপোর্ট’ বা ‘চোখ খুলে দেওয়ার প্রতিবেদন’ হিসেবে মনে করেন এনবিআরের চেয়ারম্যান।
এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ‘প্রতিবেদনটি আরও বিচার-বিশ্লেষণ করব। এতে অনেক ইঙ্গিত রয়েছে। সাধারণত কর ফাঁকি দিয়ে টাকা পাচার হয়। দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজস্ব পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে নজিবুর রহমান এ কথা বলেন। সেগুনবাগিচার এনবিআরের সম্মেলনকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
নজিবুর রহমান আরও বলেন, ‘টাকা পাচার রোধে যে দায়িত্ব পেয়েছি, তাতে বহুদূর যেতে হবে। আমরা সহকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছি।’ তিনি বলেন, ‘যতই গভীরে যাচ্ছি, অনেক কুৎসিত চেহারা দেখছি। বিভিন্ন হুমকিধমকি উপেক্ষা করেই কাজ করতে হচ্ছে।’
সরকারের উদ্যোগগুলো সম্পর্কে নজিবুর রহমান জানান, মুদ্রা পাচারের সুযোগ যাতে না থাকে, সে জন্য আইন পরিবর্তন করা হয়েছে। এনবিআর, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ব্যাংক, পুলিশ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করছে। মুদ্রা পাচার রোধে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। অনেক তথ্যের সন্ধানও পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে দেশের সব সিটি করপোরেশন ও জেলা শহরে অবস্থিত বড় ও মাঝারি সেবা প্রদানকারী ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) কিংবা পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) সফটওয়্যার স্থাপন করতে হবে।
এ ছাড়া তৃণমূল পর্যায়ে করের জাল বিস্তৃত করতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ধর্মীয় উপাসনালয়ের মাধ্যমে প্রচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য ইমাম-মুয়াজ্জিন, পুরোহিত, ভিক্ষু ও ফাদারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তাঁরা স্থানীয় জনসাধারণের কাছে কর দেওয়ার আহ্বান জানাবেন। এ সম্পর্কে এনবিআরের চেয়ারম্যান বলেন, ধর্মেই বলা আছে, কারও যদি হক পাওনা থাকে, তা যেন দ্রুত পরিশোধ করা হয়। কর হলো রাষ্ট্রের হক।
এনবিআরের চেয়ারম্যান জানান, এ বছর যাঁরা নির্দিষ্ট সময়ে বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দেননি, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় আয়কর দিবস ২০১৫ উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে রচনা প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ে বিজয়ীরা হলেন আহমেদ জাবির, আদিবা তাসনুভা হোসেন, সুদীপ্ত চক্রবর্তী, মুহাইমিনুর রশীদ, নাফিসা তাবাসসুম ও সানজিদা আক্তার। আর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিজয়ী মেহনাজ আহমেদ মম, হিমন ঠাকুর, শাহাদাত হোসেন জাকির, মাহফুজ আহমেদ, মারিয়া সুলতানা ও তহুরা আক্তার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

News Banglabd Design by
Website Mela